নারী নির্যাতন, বাল্য বিবাহ রোধ, কিশোর-কিশোরী তত্ত্বাবধায়ক, কৃষি কাজে চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণ ও নারী সংগঠক হিসেবে ‘জয়িতা’ খ্যাতি অর্জনে যার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য তিনি একজন আনসার ও ভিডিপি সংগঠনের সক্রিয় ওয়ার্ড দলনেত্রী মোছাঃ রোজিনা খাতুন, ০৫ নং ওয়ার্ড, দর্শনা পৌরসভা, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা। তার পথচলা ও জীবনের গল্প জানতে পড়তে হবে একজন ‘জয়িতা’র গল্প, গল্প হয়ে ওঠার রোজিনা’র গল্প।
নারী নির্যাতনঃ
মোছাঃ সুমিতা খাতুন, পিতা: মোঃ হাসেম, পরানপুর, দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গাকে মোঃ সাদ্দাম কর্তৃক ধর্ষণসহ শারীরিক নির্যাতন করা হলে ভিকটিমকে উদ্ধার করে দামুড়হুদা থানায় নিয়ে পুলিশ হেফাজতে প্রদান করেন
কুড়ুলগাছী ইউনিয়নের কুড়ুলগাছী গ্রামের মোঃ খায়রুল ইসলাম তার মেয়ে মোছাঃ রুমা খাতুন এর বিবাহ দেয়া হয় জীবননগর উপজেলার ডুমুরিয়া গ্রামের এনায়েত হোসেন এর সাথে। কন্যা সন্তান জন্ম দেয়ায় তার স্বামী ও শ্বশুর শ্বাশুড়ী রুমা খাতুনকে মারধোর করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। উক্ত খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে মিমাংসার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাতে কোন ফল না হওয়ায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, জীবননগর, চুয়াডাঙ্গা মহোদয়কে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করলে স্যারের নির্দেশক্রমে স্থানীয় পুলিশের সহযোগীতায় পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম ও পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে মিমাংসার ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে মোছাঃ রুমা খাতুন উক্ত স্বামীর সংসার করছে বলে জানা যায়।
বাল্য বিবাহ রোধঃ
দর্শনা মোবারক পাড়া গ্রামে মোঃ গোলজার হোসেন এর
১৪(চৌদ্দ) বছর বয়স্ক নাবালিকা কণ্যা মোছাঃ সোনিয়া খাতুন এর সাথে উথলী গ্রামের মোঃ টিপু হোসেন
এর বিবাহ দিন ধার্য্য করা হয়। তিনি উক্ত খরব পেয়ে মেয়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বাল্য বিবাহের কুফল
সম্পর্কে আলোচনা করেন। তাতে মেয়ের বাবা বিয়ে বন্ধ না করলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,
দামুড়হুদা, চুয়াডাঙ্গা’কে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করলে তার নির্দেশক্রমে স্থানীয় পুলিশের সহযোগীতায়
পুনরায় ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিকটিম ও পরিবারের সদস্যদেরকে নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে বিবাহ বন্ধ
করেন।
কিশোর-কিশোরী ক্লাবে তত্ত্বাবধায়ক ও স্বাক্ষরতা প্রকল্পের শিক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালনঃ
তিনি বাল্য বিবাহ রোধ, ইভটিজিং রোধ ওশিশু নির্যাতন রোধকল্পে কিশোর কিশোরী ক্লাবে তত্ত্বাবধায়ক পদে যোগদান করে বাল্য বিবাহ রোধ ও শিশু নির্যাতন ও ইভটিজিং রোধে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মৌলিক স্বাক্ষরতা প্রকল্প এর ৬ মাস কেন্দ্র শিক্ষিকা হিসেবে সফলভাবে শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা করেছেন।
কৃষি মাঠ দিবস উপলক্ষ্যে চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণঃ
তিনি স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর হতে প্রশিক্ষণ গ্রহন করে দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা পরাণপুর গ্রামের ৩২জন কৃষক নিয়ে নিজ উদ্যোগে আধুনিক চাষাবাদ সম্পর্কিত মাঠ দিবসে চাষীদের উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করেন। বর্তমানে উক্ত কৃষকগণ আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি গ্রহন করে এর সুফল ভোগ করছেন মর্মে জানা যায়।
নারী সংগঠকঃ
তিনি দর্শনা, পরাণপুর গ্রামের মহিলাদের নিয়ে “পরাণপুর মহিলা উন্নয়ন সংস্থা” নামক একটি মহিলা সংগঠন করেন। উক্ত সংগঠনে নারীদের অধিকার ও ক্ষমতায়ন, বাল্য বিবাহ রোধ, নারী নির্যাতন রোধকল্পে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নারীদেরকে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস অব্যাহত রেখেছেন।
খানা শুমারীঃ
দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত খানশুমারী কার্যক্রমে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে সফলতার সাথে সম্পন্ন করে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছেন।
জয়িতাঃ
তিনি নারী নির্যাতন রোধ, বাল্য বিবাহ রোধ, কৃষি সংগঠক, নারী সংগঠক হিসেবে সনদপত্র প্রাপ্ত
হয়ে পর্যায়ক্রমে দুইবার সফল এবং সাহসী নারী হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠ “জয়িতা” নির্বাচিত
হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হন। যা স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
নারী নির্যাতন রোধ, বাল্য বিবাহ রোধ, কৃষি সংগঠক, নারী সংগঠক হিসেবে সনদপত্র প্রাপ্ত হয়ে সফল এবং সাহসী নারী হিসেবে সর্বশ্রেষ্ঠ “জয়িতা” নির্বাচিত হয়েছে এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রশংসিত ও পুরস্কৃত হয়েছে ও অন্যান্য সেবামূলক কর্মকান্ডের জন্য এ বছর বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী’র “সাহসিকতা ও সেবা পদক” প্রাপ্তির জন্য প্রস্তাবনা করা হয় এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা পদক প্রাপ্ত হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস